সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৪৪ পূর্বাহ্ন
মোংলা প্রতিনিধিঃ ঘর-বাড়ী, দোকানপাটের পর এবার দুর্ধর্ষ চুরি সংগঠিত হয়েছে মোংলার শেহলাবুনিয়ার খ্রীষ্ট ধর্মাবলম্বীদের উপস্যানালয় ক্যাথলিক গীর্জা, মিশনারী স্কুল ও প্রয়াত ফাদার মারিনো রিগনের বসবাসের বাড়ীতেই। বৃহস্পতিবার দিবাগত গভীর রাতে দুর্বৃত্তরা হানা দিয়ে গীর্জার সিন্দুক, দান বাক্স, স্কুলের দরজার হ্যাজবোল্ট, আলমারী ও ফাদার রিগন বাড়ীর অন্তত ১৫টি তালা ভেঙ্গে নগদ টাকার পাশাপাশি মুল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে যায়। এছাড়া ধর্মীগ্রস্থ, প্রসাদসহ বিভিন্ন আসবাবপত্র তছনছ করে ফেলে রেখে যায়। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে দুর্ঘর্ষ এ চুরির ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের কথা জানিয়েছেন মোংলা-রামপাল সার্কেলের সহকারী সিনিয়র পুলিশ সুপার মো: খায়রুল আলম। সেন্ট পলস উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মনিন্দ্র হালদার জানান, বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে দুর্বৃত্তরা তিনতলা বিশিষ্ট স্কুল ভবনের পূর্ব পাশের লোহার গেইটের হ্যাজবোল্ট ভেঙ্গে ভিতরে প্রবেশ করে। এরপর অফিস কক্ষের দরজা ও আলমারীর তালা ভেঙ্গে নগদ ১৪ হাজার টাকা নিয়ে যায়। সেন্ট পলস ক্যাথলিক গীর্জার পালক পুরোহিত সেরাফিন সরকার জানান, একই রাতে গীর্জার পিছনের প্রধান দরজার তালা ভেঙ্গে দুর্বৃত্তরা ভিতরে ঢুকে সিন্দুক ও দান বাক্সের তালা ভেঙ্গে টাকা-পয়সা নিয়ে যায়। এ সময় দুর্বত্তরা সিন্দুকের মধ্যে থাকা ধর্মগ্রস্থ, প্রসাদসহ মুল্যবান মালামাল তছনছ করে ছড়িয়ে ছিটিয়ে ফেলে রাখে। তবে গীর্জা থেকে কি পরিমাণ টাকা খোয়া গেছে তা নিশ্চিতভাবে জানাতে পারেননি পালক পুরোহিত সেরাফিন সরকার। শুক্রবার ভোর রাতে দুর্ধর্ষ এ চুরির ঘটনাটি জানাজানির পর বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ওই এলাকা পরিদর্শন করেছেন মোংলা-রামপাল সার্কেলের সহকারী সিনিয়র পুলিশ সুপার খায়রুল আলম। এ সময় তিনি বলেন, অভিযোগ পেলেই আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে অভিযোগ দেয়ার বিষয়টি কোন সিদ্ধান্ত এখনও পর্যন্ত হয়নি বলে জানিয়েছেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মনিন্দ্র হালদার ও গীর্জার পুরোহিত সেরাফিন সরকার। তারা বলেন, যেহেতু এটি মিশনারী প্রতিষ্ঠান সেহেতু মিশনের দায়িত্বপ্রাপ্তদের সাথে আলোচনা করেই অভিযোগের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। রিগন পাড়ার বাসিন্দা টুটুল বিশ্বাস বলেন, প্রয়াত ফাদার মারিনো রিগন দীর্ঘ ৪০ বছরেরও বেশি সময় শেহলাবুনিয়ার এই মিশন বাড়ী অর্থাৎ ফাদার বাড়ীতে থাকতেন, সেন্ট পলস স্কুল দেখাশুনা করতেন এবং এই ক্যাথলিক গীর্জার পুরোহিতও ছিলেন। এই গীর্জার সম্মুখেই তাকে সমাহিত করা হয়েছে। তারই তত্ত¡বধায়ন ও ব্যবহারকৃত বাড়ী, গীর্জা ও স্কুলে যে চুরির ঘটনা ঘটেছে তা অত্যন্ত দু:খজনক। এর আগে সম্প্রতি পৌর শহরের শেহলাবুনিয়া, মিশন বাড়ী, পূর্ব কবরস্থান রোড, বটতলা, জয়বাংলা, আরাজীমাকড়ঢোন, সিগনাল টাওয়ার, গিয়াস উদ্দিন সড়ক, কলেজ রোড, দিগরাজ, বন্দর কলোনীসহ বিভিন্ন জায়গায় একের পর এক চুরি সংগঠিত হলেও এ পর্যন্ত চুরি হওয়া মালামাল উদ্ধার ও চোর কিংবা এর সাথে জড়িতদের কেউই আটক হয়নি। শহর ও শহরতলী জুড়ে ধারাবাহিক চুরির ঘটনায় আতংকিত এখানকার বাসিন্দারা।